Thursday, July 24, 2014

অণুকাব্য

অনুকাব্য-১

গাইছো শত গান গো তুমি
লিখছো কবিতা
তবু মোহিনীর নেই ভ্রূক্ষেপ
বৃথাই সবই তা



অনুকাব্য-২

উষ্ণ স্পর্শে হাজারো বর্ষে
করিলে আমারে পূর্ণ,
প্রেমের ঢলে ভাসলো যে প্রাণ
বিষাদ নিমেষে চূর্ণ

 
অনুকাব্য-৩

আমি জীবন দিয়ে স্বপ্ন গড়ি
তুমি দ্বিধার গল্প বলো।
আমি বাঁচার অধিকারে লড়ি,
তুমি রক্তের হোলি তোলো।


অনুকাব্য-৪

বিশ্বকাপের উন্মাদনায়
সবাই মাতে সুখ-বেদনায়
কেউ বা ব্রাজিল কেউ আর্জেন্টিনা
কেউ বা জিতি -কেউ জিতিনা। 

 অনুকাব্য-৫


ধ্বসছে দালান, ডুবছে জাহাজ
মরছে মানুষ ঢের
আর কতো মৃত্যুতে ঘুম
ভাঙবেই রাজাদের!!
 

Tuesday, July 22, 2014

স্বপ্ন

মিলিবে স্নিগ্ধ স্পর্শ তোমার কখনোবা চৈতালি দুপুরে
অথবা মৌন বিকেলের উদাসী জড়তায় হীম হাওয়ার মতো,
গোধূলির চুরি যাওয়া আলো নিমেষেই মনে হবে শত সহস্র 
প্রহরের সখা আর তোমার স্নিগ্ধ ছোঁয়া, এমনকি বৃষ্টিস্নাত সকালেও। 

মিলিবে স্নিগ্ধ স্পর্শ তোমার, তাই কতো আয়োজন।
শতশত শব্দাবলীর কবিতা হয়ে ওঠার দম্ভ, বাষট্টির বুড়োর
কলপ করে শাদা চুল ঢেকে দেয়ার মহাব্যস্ততা,
তোমার চপল চাহনী তাই সুরঞ্জনাদের নারীসুলভ ঈর্ষা।

তোমার স্নিগ্ধ স্পর্শ মিলিবে, কতো বদল হলো কবিতার
কিনু গোয়ালার গলি ছেড়ে কবেই হরিপদ কেরানীরা এসেছে 
চলে ভিক্টোরিয়া পার্কে নয়তো জগন্নাথের বিস্ফোরিত আঙ্গিনায়,
দারিদ্র্য ভুলে, বিদ্রোহী প্রেমিকের দুরন্ত চেতনায় ।

তোমার স্নিগ্ধ স্পর্শ মিলিবে রাজপথে অবরোধ,সংসদের
উচু নেতারা সবাই মাইক্রোফোন ছেড়ে ভিড় জমালো
শাহবাগের মোড়ে, ফুলের দোকানে,হাতে রক্তগোলাপ 
দৌলতদিয়ার আঙ্গুরলতাও সাহস করে- নতুন করে বাঁচবার।

Wednesday, July 16, 2014

ভাঙ্গন


নির্বোধ বিকেলের মূর্ছনায় হারিয়েছি কতবার তোমার ভালবাসার অতলে
কতবার কণ্ঠের উচ্ছাসে ধ্বনিত হতো অসংখ্যবার “ভালবাসি”।
শরত শোভিত আকাশটা তখন আমারই ছিল, তার মাঝে পেজো তুলোর মতো
ভাসতে তুমি, ভালবাসার তীব্র বোধনে,  হৃদয়ে প্রেমের পূর্ণতায়।
কিছু দ্বিধা ছিল, ভয়ও ছিল বেশ। সংকোচ আর ভালবাসার সংঘর্ষে
ওইদিন বিজয়ের হাসি হেসেছিল ছিল ভালোবাসা, চেতনার অহমিকায়।

পুড়নো স্মৃতি হাতড়ে হাতড়ে শূন্যতার অসীম সায়াহ্নে আহত বোধ
আজ ঢের বুঝতে পেরেছে- নির্বোধ বিকেল সেদিন জানতো না
একটু পরেই নামবে আঁধারের চাদর, কণ্ঠেও সময় আজ জরিয়ে দিয়েছে
ক্লান্তির ক্লেশ।কবিতারা কখনো স্মৃতির বিলাপ হয়ে বয়ে বেড়াবে বেদনার ছন্দ,
সময় কথা বলবে বিচ্ছেদের, মৌন বিকেলের নিস্তব্ধতায় পাশে তুমি নেই-
বরং কিছু সিগারেট, অ্যাশট্রে, ধুলোমাখা কবিতার খাতা আর
স্মৃতিতে ধুসর কিছু মুহূর্ত- বিকেলের ক্যাফেটেরিয়া আর আবছা তুমি
এককাপ কফি, থেকে থেকে দুইটি ঠোঁটের চুমুক ,সিগারেটের উটকো গন্ধে
তোমার কপট  বিরক্তি তবু  ওষ্ঠে ওষ্ঠে উষ্ণ স্পর্শ আর বিমোহিত গোধূলি। 

অথচ আজ অতীতের প্রকাণ্ড রাত্রির নিথর অবয়বে বিষণ্ণতার আল্পনা।
কবিতারা প্রতিনিয়ত কুঁকড়ে যায় বেদনার ছন্দের আঘাতে, যেন বর্তমানের
বেসুরো কণ্ঠে উল্লাস করে হাহাকার, তোমার তপ্ত ঐ ওষ্ঠ নির্দ্বিধায় গিলে নেয়
অন্য পুরুষের কামনার গড়ল, তোমার বক্ষে দাগ কেটে যায় অপরিচিত হাতের নখ।
জ্যোস্না নিমগ্ন  রাতে তোমার বুকে আজ কবিতার বই নয়, জুড়ে বসে আজ
নিয়মের অধিকার প্রাপ্ত কামিত পুরুষ শরীরের উত্তাপে উষ্ণ হয় বিছানা। 

কাগজের বুকে গ্রথিত কবিতা প্রেমকে জরিয়ে রাখলেও বর্তমানের বুকে 
গ্রথিত সময় জৈবিকতাকে হয়তো  ছাপিয়ে যেতে পারে না। অথচ এখনো হৃদয়ে
নাড়া লাগে স্মৃতির অক্ষরগুলোতে তোমার নামটি দেখে, এখনো বিভোর হই
কল্পনায়, স্মৃতির বিস্ফোরণে জেগে ওঠা তোমার চকিত চাহনি আর তোমার
প্রেমাতুর শাসন- সপ্তাহ অন্তে আমার খোঁচা খোঁচা বাড়ন্ত গোঁফ দাড়ি।
কখনো চৌরঙ্গীতে বিকেলে তোমার খোলা চুলের সাথে দুষ্ট বাতাসের দোল খেলা
আর আমার কাঁধে মাথা রেখে গুনগুন গান, কখনোবা আবার সিগারেট খেয়েছি
তাই নিদারুন অভিমান।আর আমি,হাতে রেখে হাত মান ভাঙ্গানোর আপ্রাণ প্রচেষ্টায় ।

কখনো জ্যোস্না মাখা রাতে মুঠো ফোনে তুমি কান পেতে আর আমি শোনাতাম
শত প্রেম আর দ্রোহের দৃপ্ত কবিতাবলি। আজো কি লিখি কবিতা? কি জানি!
হয়তো লিখি। কবেকার কোনো এক প্রেম আর সময়ের দ্বৈরথে পরাজিত হলো প্রেম,
মুহূর্তেই তোমার অবয়ব আজ কেবল স্মৃতিতে আর কবিতায় গ্রথিত বেদনার
ছন্দে ছন্দে। হয়তো অপরাধবোধে তুমিও আজ মুখ লুকিয়ে সান্ত্বনা খুঁজে ফেরো
সময় কে দায়ী করে। মেনে নাও সময়ের গ্রাসে সৃষ্ট ভাঙ্গনের সুর।