Thursday, October 18, 2012

বিপ্লবের সন্ধানে

প্রতিক্ষার অনাবিল মুহূর্তের দ্বারে,
খুঁজেছিনু তারে।
অদ্ভুত কোন এক নিকষ আধারের পরে
স্বপ্নালু আর শুভ্র এক ভোরে।

শুনেছি সেই গান
উদ্ভাসের আপ্লুত কলতান
বিষাদের অবসানে
বিচরণ আজ সুর আর গানে।

চেতনার প্রারম্ভিক কালে
বিদ্রোহের জাগরনি তালে
গেয়ে যাওয়া মুক্তির গান,
হবে আর্তের বিষাদ-অবসান।

কল্পচারিণী


তুমি বরুনা নও
নও তুমি নীলাঞ্জনা
কবির স্বপ্ন -সারথী নও-
নও তুমি শিল্পিত সুর-মূর্ছনা।

তবু অদ্বিতীয়া তুমি
প্রদীপ্ত তুমি বসুন্ধরার ঈর্ষা,
তব চপল চাহনি মুছে দিয়ে যাক
প্রচলিত সব হিংসা, বিভেদ, লিপ্সা।

Saturday, October 13, 2012

আত্মদহন

কখনো কোনো রাত্রির অবসাদে
নিথর নিষ্প্রাণ পিচ ঢালা  রাস্তায়
ছায়াটি  যখন মুখ থুবড়ে পরে,
শত শত বঞ্চিতের ক্লান্ত ঘুমন্ত দেহগুলো
জেগে ওঠে আড়ষ্ট অনুযোগে
আমার ছায়াটি তখন অপরাধবোধের দুর্নিবার
প্রশ্নবোধকে থমকে যায়,আত্মদহন।

তবে কি সেই শ্লোগান আর আদর্শের বিপ্লবের দিনগুলি
শুধুই লৌকিকতা আর পুঁজিবাদের মুখোশ ?
জাগরনের বার্তা কি শুধুই মিথ্যা প্রগতির বানী আর আত্মঅহমিকা!
তবে আজ কেন বঞ্চিতের ঘামের গন্ধে
লোক দেখান সভ্যতার রুমালে নাক চেপে ধরি।

একদিন যে সাম্মের স্বপ্নে মিছিলে মিছিলে
কবিতার প্রতিটি অক্ষরে ছিল বিপ্লবের বীজ
আজ সময়ের অভিশাপে লজ্জায়
হীন কায়ার ছায়া টি মুখ থুবড়ে পরা নির্বাক।

ভোরের আলো জাগে উঠতে সামান্য বাকি
আবারো ভ্রান্তির কোলে আত্মসমর্পণ
কাক-দৃষ্টি আর এড়িয়ে যাওয়া দায়ভার-
"অপূর্ণতা না থাকলে পূর্ণটার কি মানে?"
আবারো সেই বঞ্চিতের ঘামেপৃথিবী প্রসব করবে
নতুন সভ্যতা, আবার পুঁজিবাদের বেস্ত কোলাহল
যাতে আবার বিলীন বঞ্চিতের অস্ফুটো আর্তনাদ।

Monday, October 8, 2012

বাম হতে বামেতর পথে

একদিন যে  দৃষ্টি  -
অন্ধকারের লকলকে জিহব্বা তে
লাল আগুন তুলে  জন্ম দিত অরুনদ্যুতি.
সেই দৃষ্টিতে আজ
সমাজ লৌকিকতার  অমোঘ জড়তা.

একদিন যে কন্ঠ-
হাজার স্বপ্নবিমুখ সত্তাকে
শুনিয়ে যেত নচিকেতা হওয়ার স্বপ্নগান
যে গান গেয়ে যেত তারুণ্য স্তুতি
সে কন্ঠ আজ
বিমর্ষতার বিলাপে ভারাক্লান্ত, বহুজাতিক আওভানে ব্যাস্ত..

একদিন যে কলম ডায়রির বুকে ঝড় তুলে যেত
যুবতীর কামনা লালিত সজ্জায়
যেমন উন্মত্ত যৌনতার ঢেউ তলে
কোনো প্রনয়কলাবিশারদ
কলমের উষ্ণ ছোঁয়ায় শূন্য ডায়রির বুকে জন্ম নিত
একটি মহাজাগতিক স্বপ্ন

সেই কলম আজ
সুনিশ্চিত আগামীর সাচ্ছন্দ স্বার্থপরতায়
অবসর খোঁজে একাকী কোনো কলমদানিতে .
ডায়রিটি  পরে থাকে বুকসেল্ফের অধরা অন্তপুরে-
সঙ্গী করে নেই বিরুদ্ধ সময়গ্রন্থির
তুলে দিয়া উপহার-কিছু মাকড়সার ঝুল.

একদিন যে হস্তযুগল
অধিকারের প্লাকার্ড উচ্চে তুলত
সংস্কৃতির স্নিগ্ধ হাসি জেগে উঠত
যে হাতর উষ্ণ স্পর্শে.
কোনো রমনীয় বক্ষে গড়ে তুলত
বর্ণিল শত স্বপ্ন-ভালবাসার প্রেরণা
সে হাত আজ নাগরিক অবসাদে
হাই তুলে যাব ক্লান্ত মুখের সামনে স্থির.

একদিন যে ভাষা গর্জে উঠত বঞ্চিতের হয়ে
যে ভাষায় প্রাণ পেত নজরুলের সৃষ্টি সুখের উল্লাস
আর রবির সেই নির্ঝরিণীর সুর
যে ভাষা তরুণ প্রাণে ধরা দিত
উদ্দীপ্ত আলোর আবাহনী হয়ে.
গড়ে তুলত সমতার সঙ্গীত.সেই ভাষা আজ
মুঠোফোনে কপট ধ্বনিতে স্বার্থ অন্বেষণে ব্যস্ত.
চেতনা আর মূল্যবোধ
বামে নয়, বামেতর পথে  প্রবল যাত্রায়
কপট সুখ ঐশ্বর্য লোভে মত্ত কোনো স্বার্থপরের মাঝে বিলীন..