Sunday, December 20, 2015

গতিময় মোহনায়



ধীর লয়ে বইছে সময়
কখনো গায়ে মেখে প্রখর রুদ্র উত্তাপ
ধরিত্রীর উষ্ণ অনুরাগে,
কখনোবা সাথী করে নিকষ অন্ধকার
নিমজ্জনের শীতল বিরাগে।
অশরীরী ধূপছায়ায় আবহমান।  
নির্মোহ দিনাতিপাতে কখনো
তেড়ে ওঠে উম্মাদনা,বাসনার হিন্দোল
ঢেউ তোলে চিত্তের তটিনী পরে।
বিস্মৃত সুখও কিছু উঠে আসে  
অপার যাতনার কঠিন পৃষ্ঠ ভেদে।
সময় বয়ে চলে অনিমেষ,
জাগ্রত ক্ষণের রঙ্গিন আবেশে,
কখনোবা অন্ধকারের নির্লিপ্ততায়।
গতিময় মোহনায়।


Monday, December 7, 2015

হালের হাওয়ায় লীন



হালের হাওয়া তাল বাজিয়ে
চলছে মহাকাল
দেখছি বিশ্ব দেখছি সমাজ
আমরা পঙ্গপাল ।

যুদ্ধ লাগুক লাগুক আগুন
আমরা আছি বেশ
কিসের জরা কিসের খরা
দেয় না নাড়া লেশ।

শান্তিকামী আমরা সবাই
মুখ বুজে সব সই
সময়টাকেই ভাগ্য ভেবে
নিত্য যে চুপ রই।

এই যে মানুষ মরছে কত
দগ্ধ অনল বিষে
আহা উহু মোর প্রতিবাদ
রক্ত স্রোতে মিশে।

লৌকিকতা জয়জয়কার
আমার তেজে বহে,
চোখ বুজে থাক, এই প্রতিবাদ
মোদের জন্য নহে।

লাঞ্ছিত হই, লুণ্ঠিত হই
মেনে নেই মোর ভাগ্য।
সান্ত্বনা হয়ে রয় যে বিলাপ
সহ্যই আরোগ্য।

পিঠ দেখানো রাস্তা ধরে
পরের দিনটি শুরু।
পত্রিকাতে চোখ ডুবিয়ে
কুঁচকানো থাকে ভুরু।

শান্তিপ্রিয় সুশীল মোরা
নিত্য কাটাই দিন।
মিছিল স্লোগান ইতিহাস হয়ে
হালের হাওয়ায় লীন।

আরেকটি নীলের প্রতীক্ষায়



বারুদের আবরণে ঢাকা আকাশ
কালো মেঘের পরিচয়ে প্রতীক্ষারত,
অগ্নিবৃষ্টি হয়ে ঝরবার।
এখানে আকাশ আজ আর নীল নেই
মুক্ত বিহগের তাজা রক্ত
একে রক্তাক্ত করেছে বারবার,
আমরাও এই রক্তাক্ত আবরণকে
আবীর ভেবে মেতেছিলাম অন্ধ প্রমোদে।
মহাকাল অসহায় মেনে নেয়
রক্তাক্ত উল্লাস, বয়ে নিয়ে আপন ক্ষত।
আজ তাই বিছিয়ে বিলাম বারুদের স্তুপ,
আরেকটি নীলের প্রতীক্ষায়।

Monday, November 30, 2015

না আজ আর অভিমান নেই



না আজ আর অভিমান নেই, 
সময়ের বিবর্ণ আচ্ছাদনে অভিমান গুলো লালনীল প্রেমের রঙ হারিয়ে বোধহীন সাদাকালো নৈমিত্তিক সহজতা। হয়ত আবেগগুলো ভালবাসার দীর্ণ অবসানে আজ ঘৃণায় লালিত। কামিত বিছানায় আজ নিরুত্তাপ আবেগের গড়াগড়ি, নিস্তরঙ্গ অনুভূতি, মাঝে মাঝে শুধু দৈহিক নিয়মের প্রতিপালন। অধুনা বসন্তের ফাল্গুনী মোহ জমে আছে কেবল জড় কিছু অক্ষর হয়ে স্মৃতির মলিন প্রচ্ছদে প্রাত্যহিক জীবনবোধে আমরা লালন করে যাই প্রেমহীন কিছু নির্ণীত নিয়ম। 

হাজারো নিষ্প্রাণ জড়তার ভিড়েও ঘৃণাটুকু মাঝে মাঝেই জীবন্ত হয়। না না, পাশের পাশের ফ্ল্যাটের অষ্টাদশীর কোন বিষয় নেই কিংবা অফিসের বাচাল ছোঁকছোঁক করা জেই যুবকও নয়। জীবনের আলিঙ্গনে স্বতন্ত্র কিছু আদর্শও আমাদের আছে। নেই কেবল সেই ফেলে আসা অভিমান, নির্ঘুম যাতনা ভরা রাত্রিগুলো, উষ্ণ বিছানার উত্তাল কিংবা তুমিময় নতুন কোন কবিতা। 

ছাপোষা জীবনে কবিতা বড় কিছু নয়। প্রেমকে ছাপিয়ে নিরুত্তাপ ঔদাস্য তাই অমোঘ। বিক্ষিপ্ত শহুরে গলির মতই ছড়িয়ে যায় সে। পদদলিত আধপোড়া সিগারেটের মত পিষ্ট হয় প্রেম, নিয়ত। প্রতিদিন সূর্য ওঠে, জানালা দিয়ে  উকি দেয় সকালের স্নিগ্ধ রোদ। সেও আর নতুন কোন স্বপ্ন নয়, খুনসুটি নয়,গতানুগনিক জানান দেয় আরেকটি দিন যাপনের।

Sunday, November 29, 2015

আর কত রক্ত চাই?



আর কত রক্ত চাই?
রক্তখুনে তৃষ্ণা মেটাও
পিশাচ উল্লাসে উপভোগ কর
রক্তস্নাত ঘৃণ্য অবগুণ্ঠন।
এতেই তোমার সভ্যতার রক্ষন!
শত শত লাশের গলিত স্তুপে দাঁড়িয়ে
চি
কার করে জয়ের নিশান ওড়াও।
অসহায়ের ছিন্ন মস্তকে তোমার শৌর্য!

রক্ত পিপাসু তুমি,
পান কর যন্ত্রণাকাতর মৃতপ্রায়
মনুষ্য দেহ থেকে গলগল গড়িয়ে যাওয়া শোণিত।
আর কত রক্ত চাই তোমার?
আর কত ছিন্ন মস্তক
তোমার শৌর্যকে করবে বীর্যবান!
আর কত তাজা প্রাণের নিথর নিমজ্জনে
রক্ষিত হবে তোমার চর্চিত আদর্শ ?

কবিতার অক্ষরে অক্ষরে আজ
ছোপ ছোপ রক্ত, প্রেমিকের বুকে জমা
লাল লাল রক্ত, আপামর মানুষের দেহে
ধারিত শেষ সম্বল যে রক্ত
সব তোমার লোভাতুর
জিভের আহার হবার প্রতীক্ষায়।

তোমার সভ্যতা রঙিন করতে
আর কত লাল দরকার?
জেনে রেখো রক্তিম সূর্য এখনো
উদয়ের প্রতীক্ষায়।
যেদিন তোমার সব পৈশাচিকতা
ভস্ম হবে অরুন তেজে।
রক্ত চাও তো নাও,
তৃষ্ণা মিটিয়ে তৃপ্ত হও।
নিজেরই ধ্বংসের প্রতীক্ষায় থেকো ।
তোমার রক্তেই রঙিন হবে বসুন্ধরা ।