Monday, November 30, 2015

না আজ আর অভিমান নেই



না আজ আর অভিমান নেই, 
সময়ের বিবর্ণ আচ্ছাদনে অভিমান গুলো লালনীল প্রেমের রঙ হারিয়ে বোধহীন সাদাকালো নৈমিত্তিক সহজতা। হয়ত আবেগগুলো ভালবাসার দীর্ণ অবসানে আজ ঘৃণায় লালিত। কামিত বিছানায় আজ নিরুত্তাপ আবেগের গড়াগড়ি, নিস্তরঙ্গ অনুভূতি, মাঝে মাঝে শুধু দৈহিক নিয়মের প্রতিপালন। অধুনা বসন্তের ফাল্গুনী মোহ জমে আছে কেবল জড় কিছু অক্ষর হয়ে স্মৃতির মলিন প্রচ্ছদে প্রাত্যহিক জীবনবোধে আমরা লালন করে যাই প্রেমহীন কিছু নির্ণীত নিয়ম। 

হাজারো নিষ্প্রাণ জড়তার ভিড়েও ঘৃণাটুকু মাঝে মাঝেই জীবন্ত হয়। না না, পাশের পাশের ফ্ল্যাটের অষ্টাদশীর কোন বিষয় নেই কিংবা অফিসের বাচাল ছোঁকছোঁক করা জেই যুবকও নয়। জীবনের আলিঙ্গনে স্বতন্ত্র কিছু আদর্শও আমাদের আছে। নেই কেবল সেই ফেলে আসা অভিমান, নির্ঘুম যাতনা ভরা রাত্রিগুলো, উষ্ণ বিছানার উত্তাল কিংবা তুমিময় নতুন কোন কবিতা। 

ছাপোষা জীবনে কবিতা বড় কিছু নয়। প্রেমকে ছাপিয়ে নিরুত্তাপ ঔদাস্য তাই অমোঘ। বিক্ষিপ্ত শহুরে গলির মতই ছড়িয়ে যায় সে। পদদলিত আধপোড়া সিগারেটের মত পিষ্ট হয় প্রেম, নিয়ত। প্রতিদিন সূর্য ওঠে, জানালা দিয়ে  উকি দেয় সকালের স্নিগ্ধ রোদ। সেও আর নতুন কোন স্বপ্ন নয়, খুনসুটি নয়,গতানুগনিক জানান দেয় আরেকটি দিন যাপনের।

Sunday, November 29, 2015

আর কত রক্ত চাই?



আর কত রক্ত চাই?
রক্তখুনে তৃষ্ণা মেটাও
পিশাচ উল্লাসে উপভোগ কর
রক্তস্নাত ঘৃণ্য অবগুণ্ঠন।
এতেই তোমার সভ্যতার রক্ষন!
শত শত লাশের গলিত স্তুপে দাঁড়িয়ে
চি
কার করে জয়ের নিশান ওড়াও।
অসহায়ের ছিন্ন মস্তকে তোমার শৌর্য!

রক্ত পিপাসু তুমি,
পান কর যন্ত্রণাকাতর মৃতপ্রায়
মনুষ্য দেহ থেকে গলগল গড়িয়ে যাওয়া শোণিত।
আর কত রক্ত চাই তোমার?
আর কত ছিন্ন মস্তক
তোমার শৌর্যকে করবে বীর্যবান!
আর কত তাজা প্রাণের নিথর নিমজ্জনে
রক্ষিত হবে তোমার চর্চিত আদর্শ ?

কবিতার অক্ষরে অক্ষরে আজ
ছোপ ছোপ রক্ত, প্রেমিকের বুকে জমা
লাল লাল রক্ত, আপামর মানুষের দেহে
ধারিত শেষ সম্বল যে রক্ত
সব তোমার লোভাতুর
জিভের আহার হবার প্রতীক্ষায়।

তোমার সভ্যতা রঙিন করতে
আর কত লাল দরকার?
জেনে রেখো রক্তিম সূর্য এখনো
উদয়ের প্রতীক্ষায়।
যেদিন তোমার সব পৈশাচিকতা
ভস্ম হবে অরুন তেজে।
রক্ত চাও তো নাও,
তৃষ্ণা মিটিয়ে তৃপ্ত হও।
নিজেরই ধ্বংসের প্রতীক্ষায় থেকো ।
তোমার রক্তেই রঙিন হবে বসুন্ধরা ।

কালান্তরে



অগত্যা নির্বোধ সময়ের ধৃষ্টতায় ভ্রষ্ট বর্তমান
কিছু কিছু স্মৃতি, কিছু যাতনা বোধহীন ছিল।
প্রমোদ সময়ের ক্ষণ কবেই হয়েছে স্মৃতি
অতীতের অতলান্তে গভীর নিমজ্জনে।
পড়ে রয় হেলায় আহত বর্তমান আর দগ্ধ কিছু বাস্তব।
বিষণ্ণ পৃথিবীর নীরব সাক্ষী হয়ে অনির্বান দগ্ধ সে।
ঢেউহীন নদীর অদৃশ্য স্রোতে পাড় ভাঙ্গা তীর নিয়ে
নির্বিকার প্রতীক্ষারত- বিলীনের।
খোলা চুলের দুরন্ত উদ্দীপনা আর স্বচ্ছ জলের মত  
স্নিগ্ধ হাসি স্মৃতির প্রচ্ছদে জড়, নির্বাক ঢের।
শাশ্বত মহাকালের বুক থেকে একমুঠো সময় ছিনিয়ে
বর্তমানের বুকে গেঁথে দেয়া যেত  যদি ।
বিজয়িনীর হাসিতে উল্লাসিত হতে তুমি,
আমিও জয়ের উন্মাদনায় সপ্ত রঙের তুলি নাচাতাম
সময়ের ক্যানভাসে, বিষাদের আবহ সঙ্গীত সুর বদলে
সৃষ্টি করত প্রেমের তান। বিষানে নয়,
যদি আবার দগ্ধ হতাম তোমার প্রেমের স্পর্শে!
সেতো সব দুর্লভ অলীক বিলাস, ভ্রান্তির কুহক আজ।
আজ হৃদয়ের বিরস সুরে বয়ে চলে সময়,
তোমাহীন অভ্যস্ততায় , কালান্তরে।