Saturday, November 30, 2013

গোধূলির অন্তিমে

মহাকালের অনন্ত গ্রন্থি হতে ধেয়ে আসা অতীত যখন
সাক্ষ্য দেয় বিপ্লব, প্রেম, আড্ডা কিংবা
 রংচটা সেই গীটারের সুর ঝংকার,
এক অস্ফুট ক্ষীণ বিষাদের ছায়া ঢেকে দেয়-
রৌদ্রকরোজ্বল সজীব বোধন।

নীল বিষের জলাঙ্গি হয়ে প্রতিটি মুহূর্ত তার
স্বার্থপর থাবায় আহত করছে হৃদয়,
পুরাতন অতিথির মতো দুঃখ এসে করা নারে জীবনের দারে-
ফুলেল সৌরভ ভরা সেই রডডেন্ড্রনগুচ্ছ কেবল
শুঁকনো হাহাকারের ঝাঁঝালো রূপ আজ।

যখন চৈতালি বিকেলের অন্তিমে অস্তগামী সূর্য
গোধূলিকে জাগিয়ে তুলত এক অপরূপ মোহময় আবেশে,
দিবসের শত ক্লান্তি যখন ওই ভ্রমরকৃষ্ণ কেশের ছোঁয়ায়
কর্পূরের মতো উড়ে গিয়ে উষ্ণ ভবিষ্যতের রূপোলী আভায়
স্বপ্নে স্পশিত হতো দুটি হাত, অমোঘ রাত্রি তখন
কল্পনারও অতীত- ছিল সুখের আচ্ছাদন।

আজ এই সুরে রুদ্ধতার শৃঙ্খল,
আজ এই বক্ষে যন্ত্রণার কালো ক্ষত-
আজ সেই গোধূলি বেলা ফেলে আসা নিথর অতীত।
সত্ত্বা জুড়ে যার বিচরণ, যার বুকে ছিল বসুধার আশ্রয়-
যার অশ্রুতে এই হৃদয়ে বেদনার ঊর্মিলহর-
আজ কেবল সে বর্ণহীন স্মৃতির ধুম্রজালে
মলিন গল্পকন্যা।

সপ্তবর্ণে যদি কখনো এসে ছুঁয়ে দেখো এই রিক্ত বক্ষতল,
অনুভব করবে মধ্যানহের কালতুল্য সূর্যের উত্তাপজ্বালা,
জানি, হয়তো মনে হবে - এ কোনো সস্তা প্রেমের উশৃঙ্খল বিলাপ
কিংবা উম্মাদ বসন্তে স্বপ্ন ভঙ্গের ঈর্ষা।

তবু বলছি শোনো-
যখন কণ্ঠে ছিল সাম্যের উত্তাল সুর,
যখন হস্ত মুস্থি ঊর্ধ্বমুখী আওভানে অধিকারের শ্লোগানে মুখর
যখন সময়ের অলংকার ছিল মিছিল, প্ল্যাকার্ড আর গণসংগীতের
উত্তাল মূর্ছনা। তোমায় উপমা করে হাজারো কবিতা
তখনো জমে ছিল ডায়রির পাতায়,
ভালোবাসা তখনো সুর তুলত সেই রংচটা গীটারে
ক্ষীণ ডাকতো- গোধূলি...


Tuesday, November 26, 2013

সেই পুরনো হাসি

কবেকার ধুলোমাখা পুরনো পাণ্ডুলিপি
মলিন এস্ট্রে, ঝুলে ভরা কয়েকটা চিঠি,
একটা পুরনো ছবি, সেই পুরনো হাসি।

প্রতিবাদের সেই সুর, প্রেমাতুর সেই আহ্বান,
উদ্দীপ্ত সেই স্পর্শ, উচ্ছ্বাসিত অনাবিল সেই হাসি
কখনো রৌদ্র মায়ার উত্তপ্ততা,
কখনোবা শ্রান্ত বিকেলের মেঘ-মেদুরতা,
কখনো মৌন রাত্রের গাঢ়তায় মুঠোফোনে-
তোমার কণ্ঠ, তোমার সেই হাসি।

আজ সময়ের কঠোর প্রকোষ্ঠের অপাশে
স্সেই পুরনো হাসি  গেঁথে আছে বর্তমান হয়ে
একটি মলিন স্মৃতির ফ্রেমে।

আজ আমি বড় ক্লান্ত
আজ আমার ছন্দরা দিকবিভ্রান্ত,
আজো অন্ধ সাম্যের চেতনা চোখ মেলতে চায়
বাস্তবায়িত বাস্তবের দৃষ্টি দিয়ে, তবু সেই চেতনার
সোপানে বাড়িয়ে  দেয়া তোমার হাত-
আজ অদৃশ্যের গ্রাসে বিলীন।

সময়ের ভারে চেতনাও হয়তো ভারাক্লান্ত,
তাই এই প্রস্থান, শুধু বেঁচে থাকবে
 তোমার আমার সেই ফেলে আসা অতীতে
কিছু দৃপ্ত শ্লোগানের ধ্বনি, তোমায় নিয়ে লেখা
কয়েকটি কবিতা, পুরনো কিছু স্পর্শ,
আর তোমার পুরনো হাসি...




Tuesday, November 5, 2013

ক্লান্ত কবিতার যবনিকা

সবুজের কোলে শুয়ে আর স্বপ্ন দেখবে না কবি,
আর জেগে উঠবে না কবিতার প্রতিটি অক্ষরে অক্ষরে
গ্রথিত উন্মাদনা আর সৃজনের নন্দিত শব্দাবলী।
কোনো বরষায় বনলতাদের ভেজা শাড়ীতে সলজ্জ প্রকম্পন
আর ছবি হয়ে ধরা দেবেনা কবিতার শব্দ জুড়ে।

এখানকার আকাশ নীল হচ্ছে অস্ফুট বেদনার নীলে।
সেই স্বপ্ন- ঝরা পাতাদের নাচ মুছে গেছে কবেকার
নির্বোধ অতীতে। এখন শুধু পাতাই ঝরে আর গায়ে তার
শুষ্ক ফাটল, বছর বছরান্তের পিপাসায়।
পরে থাকে অবহেলায়, বোধের অসারতায় লীন।

ষোড়শীর দুরুদুরু বুকে আজ প্রেম-আকাংঙ্খা নেই,
আছে ভয়- ধর্ষকামীর ভয়ার্ত কালো হাতের।
তাই কবিতাও মুখ থুবড়ে পরে আছে -
অবহেলিত মোচড়ানো কাগজের বুকে
নোংরা গারবেজে...

যেখানে পরে আছে কবির নৈশব্দ যাতনা-
অবশেষে বুঝিলাম সীমার ওপারে শূন্যতায়,
সময়ের নির্মম নীরবতায়...
ক্লান্ত কবিতার যবনিকা।



Thursday, October 31, 2013

মৃত্তিকার মায়ায়

অবগাহনের আবাহনী সুরের নিবিড় নিমগ্নতায়
ডুবন্ত কবি আজ মৃত্তিকার মায়ায়।
আছে মালিন্য, আছে অন্ধকার,
আছে তীব্র পিছুটান
তবু ভেসে যায় সে, কোন আবেগে-
পেয়ে কোন তিমিরের আওভান।
তবু হায়, সে মৃত্তিকার মায়ায়-
 কোনো এক নিশিথের প্রণয়ে...

Monday, October 21, 2013

দুঃস্বপ্ন আর ক্লান্তির ব্যাপ্তি...

রৌদ্র ছিল তবু উৎশৃঙ্খল হইনি তার তপ্ত তেজে,
জ্যোৎস্না ছিল তবু স্নিগ্ধতায় আশা বাঁধিনি প্রেমাঞ্জলির।
মুঠো মুঠো স্বপ্ন ছিল পকেটে,
কখনো সময়ের ধৃষ্টতায় বাধ সাধে নি বাস্তব হয়ে ডানা মেলবার।

রাবিন্দ্রিক ছন্দ নিত্যকার -
"সময় কোথায় সময় নষ্ট করবার"
আমি আজ বধির শ্রোতার মতো নির্বিকার,
গ্লানি আর থিতু হওয়া মানসিকতার দায়ভার।

স্বপ্ন এখানে বিলাসময় আবেগের ভ্রান্তি,
লাল লাল আবেগ গুলো স্মৃতির গায়ে লেপ্টে আছে
থোকা থোকা থেঁতলানো পিষ্ট কৃষ্ণচূড়ার মতো।

ঝরা পাতার বিবর্ণ দুঃখ জমে হৃদ-অঙ্গনে,
অন্ধকার এখানে ক্লেদাক্ত প্রেরণা, নির্মম ছন্দহীন পদাঘাত
কবিতার বুকে, ধেয়ে আসে বিষণ্ণ আধার অমোঘ প্রেরণা হয়ে
নিজেকে ম্লান করে দেয়ার নিষ্ঠুর অভিপ্রায়ে মগ্ন হই,
জীবনকে বঝার মতো বইতে হয় সময়ের স্রোতে,
ক্লান্তি নিয়ে।



Thursday, August 29, 2013

ভাঙ্গন আসন্ন

ভাঙ্গন আসন্ন, অন্ধকারের রাশ উৎসব-
স্বপ্নের সমাধিতে নৈরাশ্যের ভার
নাগরিক অন্ধত্বে পথভ্রষ্ট হাজারো বঞ্চিত
এখানে বাতাসের গন্ধে দাসত্বের বিষ।
এখানে অন্তহীন প্রতিধ্বনিত হয়
ধর্ষিতার আর্ত- চিৎকার।
এখানে অন্ধকারের জাল বুনে যায়
নৈরাজ্যের হিংস্র হাত। তাই মুক্তির প্রণোদনা
এখানে বিলাসিতাময় বিলাপ।
ভাঙ্গন আসন্ন আজ। মূল্যবোধের ভাঙ্গন,
চেতনার দৃপ্ততার ভাঙ্গন, স্বাধিনতায় ভাঙ্গন,
প্রসূতির অকাল গর্ভপাতে রক্তের ভাঙ্গনের
মতো ভাঙ্গন, ছেয়ে যায় ধরা স্বার্থের বিসাক্ত
বাতাসে। একতা নয়, ঐক্যহীন তথাকথিত
ছিমছাম সুবাতাস গায়ে জড়িয়ে প্রতিনিয়ত
মানুষ পান করে যায় শৃঙ্খলের গড়ল।
ভাঙ্গন আসন্ন আজ । তাই অন্ধকার ডানা ঝাঁপটায়
হিংস্র বিকট উন্মত্ততায়।

Monday, June 24, 2013

হাসি রা হারিয়ে যায়...

কোন এক প্রভাতে রুদ্রনীল প্রকৃতি
প্রাণ পেলো তোমার আবির্ভাবে।
শত শত কবিতা গান হলো তোমার সুরের ছন্দে
ইচ্ছের রঙ্গে রঙিন চিত্ত- তোমার হাসির মুগ্ধতায়।

ঝড় এলো, পাণ্ডুলিপি ছিন্নভিন্ন হলো।
স্বপ্ন ধেকে গেলো দুঃস্বপ্নের ছায়ায়,
বিষাদের খরতাপে আবার দগ্ধ হয় প্রাণ-
হাসি হারিয়ে যায়, হাসি রা হারিয়ে যায়।

Thursday, June 6, 2013

তুমি আমি ক্যাম্পাস আর...

আমার তখন বখাটে গড়ন- সিগারেট ঠোঁটে গুঁজে
তোমার তখন তপ্ত উনিশ, স্বপ্ন দুচোখ বুজে...
সঙ্গী তখন ক্যাফেটেরিয়া, নিত্য উদাস বিকেল
তোমার তখন খেয়ালী মনে শত যাতনার উদ্বেল।
ছিল সন্ধ্যা, টিএসসি আর চৌরঙ্গীর মোহনা,
তোমার ছিল কফির চুমুক- দৃষ্টি জুরে প্রেরণা।
আমার ছিল দৃপ্ত শ্লোগান, কন্থে মাদকতা,
তুমি মিশে ছিলে অভিমানে ছিল অনুযোগ কথকতা।
মৌন বিকেলে অমর একুশে, গোধূলি বেলায় প্রান্তিক,
মুঠোয় মুঠোয় আবেগ গাথা দুটি প্রানে ঐকান্তিক।
ট্রান্সপোর্টের আড্ডা আর তোমার এলোকেশে উচ্ছ্বাস-
দ্রোহের কাব্য, জাগরণী গান, তাসের আসরে উল্লাস।
ক্লাসেতে বসে পেছন সারিতে চিঠি লেখালেখি ধুম,
হেঁটেছি কতনা হাতটি ধরে বৃষ্টিতে রুমঝুম।
স্পর্ধার যত অবাধ্যতায় আমার উষ্ণ চুম্বন,
তোমার কভু দুরু দুরু বুক, কখনো বা দৃঢ় আলিঙ্গন।
আমার ছিল বেকার জীবন, কিছুটা সম্ভাবনা,
চাইলে হঠাৎ  নিশ্চয়তা, " অকুলে ভাসবনা"!
রুঢ় বাস্তবে আজ দূরে তুমি, সাথী মোর আজো সিগারেট,
এসে দেখো তবে দেখতে  পাবে- কাঁদে আজো ডেইরি গেট।

Wednesday, May 29, 2013

ভুল করেছিলে মাস্টার দা

হাওয়ায় উড়ছে উড়ছে-
এগলি থেকে ও গলি।
এর হাত থেকে ওর হাত।
একটি রঙ্ঘিন সার্ট।
রক্তিম নয় রক্তাক্ত।
তাই নিয়ে আজ রাজনীতির স্ট্রেটেজিক হাতবদল।।
হ্যাঁ মাস্টার দা,
এ তোমারই আদর্শের রক্ত,
ঘৃণ্য নেতার নিকৃষ্ট রাজনৈতিক হাতিয়ার।
হাহাহা মাস্টার দা, বিপ্লব দীর্ঘজীবী হয়না,
স্বার্থের কাছে মাথা নুয়ে প্রলম্বিত হয়।
এখন বিপ্লবীর বড় যুদ্ধ- প্রতিক্ষা।
বিপ্লবীর রক্তমাখা সার্ট
 আজ নেতার স্বার্থরক্ষার টিস্যুপেপার।
ভুল করেছিলে মাস্টার দা,
এ সার্ট উরবেই অনন্তকাল,
এগলি থেকে ওগলি,
এহাত থেকে ওহাত।

Thursday, April 11, 2013

তুমি বিপ্লবী প্রেমের কবিতা

স্নিগ্ধ তব ওই হাসিমুখ
চিত্তহারা প্রানে জমে সুখ
ওড়না ঢাকা বক্ষ তোমার
অবাধ্য হয় দৃষ্টি আমার
বাসনা জড়ানো ওষ্ঠ দেখি
হৃদ কাননে ভালোবাসা আঁকি
উড়ছে মন আজ কোন ব্যকুলে
ওই প্রশস্ত কটির দোলে
কুরুচি বাসনা পায় না কো ঠায়
প্রেম জাগে তব মাধুর্যতায়
অম্লান তুমি তুমি সুস্মিতা
তুমি বিপ্লবী প্রেমের কবিতা

Tuesday, April 2, 2013

মিসেস দে

কবেকার কোন প্রভাতের শারদীয় উদ্ভাসে
শিশির ছোঁয়া আদ্র গোলাপ পাপড়ি,
নগ্ন পায়ের চপল ছন্দে অনুভূতি ছড়িয়ে যায়
কাব্যে কাব্যে, প্রভাতীর স্বপ্নীল আলোয় আঁকা
ভালোবাসার ক্যানভাস, সেই সুস্মিতার হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া হাসি
কড়া নাড়ে চিত্তে কাব্য হয়ে।

অসংখ্য কবিতা,
মনে হয় পৃথিবীর সব ফুলের পাপড়িতে
গেঁথে থাকুক সেই সুস্মিতার হাসি,শারদীয় প্রভাতের রৌদ্রজুড়ে
তার স্পন্দিত উল্লাস জন্ম দিতো সুর, উষ্ণ ঠোঁটের তীব্র যাতনায়
কবি হয়ে যেত বিপ্লবী ,প্রেম আর দ্রোহের ছন্দে।

আজ কোন এক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রেস্তোরাঁয়
শারদীয়  সতেজতা নেই,আছে নিয়ন আলোর আবছা মৌনতা
ব্যস্ত সময়ের অশান্ততায় অবসন্ন মন আজ কবিতা গড়ে না,
আঁকে না কোন সুস্মিতার উন্মুক্ত বক্ষের স্বপ্নাতুর অনুভূতি,

ঘড়ির কাঁটা ঘুরছে ঘুরছে।
পাশের টেবিলে চেনা মুখ, চেনা হাসি, শুধু
অপরিচিত সময়।
উঠে যাওয়ার আগে একটা সম্বধন কানে আসলো-
ধন্যবাদ মিসেস দে, মৃদু হাসলাম।

এগিয়ে চললাম একা। হয়তো একটা হাত সামনে এসেও
আওভান না করে গুঁটিয়ে গেলো,
মিসেস দে বর্তমান হয়ে থাক পৃথিবীর কাছে,
সুস্মিতার স্মৃতি চির অম্লান থাক-
পান্দুলিপির কাব্যে কাব্যে, ডায়েরির  প্রতিটি অক্ষরে।
সময়ের ব্যবধান-
হাহাহা মিসেস দে।











Wednesday, February 13, 2013

বিপ্লবের গান


জেগে ওঠো আজ মানব সমাজ, জেগে ওঠো সব প্রাণ
৭১ এর ঘাতক দালাল হোক তার অবসান।
আজ প্রজন্ম চত্বরে
জেগেছে তরুন কত্তরে-
শত কবিতার শব্দাবলী হয়েছে অঙ্গীকার।
মুক্তির সুর রাঙিয়ে এবার বাজবে এই গীটার।
তুই রাজাকার, তুই রাজাকার।
বাংলা ছাড়। বাংলা ছাড়।
শ্লোগান , গান আর গণসংগীতে
জাগো অপশক্তির বিপরীতে
শত বাঙ্গালীর রক্ত দানে ক্রিত এ স্বাধীনতা
নর পিশাচের ফাঁসির দাবীতে জাগ্রত জনতা।
লাল সবুজের পতাকা আজ চেতনা আমার
রক্ত দিয়ে রাখবো যে মান অর্জিত স্বাধীনতার...
তুই রাজাকার, তুই রাজাকার।
বাংলা ছাড়। বাংলা ছাড়।