Wednesday, May 24, 2017

একটি চুমুর প্রতীক্ষায়

মাঝে মাঝে প্রেমিকও যখন বিদ্রোহ করে গাঢ় চুমু খেতে চায় বিহ্বল আলিঙ্গনে,
প্রিয়তমা, মুহুর্তেই হয়ে যাও যেন মহিলা হোস্টেলের নিরস হল সুপার।
জানো সব প্রেমিকই জীবনানন্দ হয়, নয়ত বিষ্ণু দে
তুমিই কেবল বনলতা হও নি।
এ বছর মে মাসের অসহ্য গরমের মত
ওষ্ঠাগত প্রাণ, একটি চুমুর প্রতীক্ষায়।
উৎকণ্ঠিত কবি মধ্যরাতের অনাহুত
অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি নয়,
তোমায় সাথে নিয়ে জোৎস্না খুঁজবে বলে তার আগমন।
অথচ তুমি প্রথার পর্দায় চাঁদকে ঢেকে দিলে।
কামিত বুকের গন্ধ ভরা বরুণা হলে
মধ্যরাতের উষ্ণ বিছানায়।
বনলতা হলে না, হলে না যামিনী রায়।
শব্দরাও তাই কাব্য বোনে-
একটি চুমুর প্রতীক্ষায়।

Monday, May 22, 2017

বিষণ্ণ সংকেত



অনেকটা পথ এখনো রয়েছে বাকি,
এমনি শুনেছি চারপাশে, মৌখিক সান্ত্বনায়।
অথচ চলতে চলতে একা, ক্লান্তিও ভর করে অস্থি-মজ্জায়
মহাকালের বুক থেকে বরাদ্য পাওয়া এক চিলতে জীবন
তবু জীবনানন্দিয় বিপন্ন বিস্ময়ে ক্লান্ত হয় নিয়ত।
কিছু কিছু ঝড় হয়তো পুর্বাভাস ছাড়াই
জানান দেয় তান্ডবময় অস্তিত্ব।
সময়ের তীর বেয়ে ধেয়ে আসা শঙ্খনাদ
সুর তুলে যায় থমথমে নির্জনতায়,
অস্তরাগের আবির্ভাবে, তবুও বলছ!
অনেকটা পথ বাকি?

পায়ের মাপের ভূমি নিয়েছে আপন পরিচয়
চলিঞ্ছু জীবনের প্রতিটি কক্ষপথে, সংকীর্ণ রুদ্ধতায়।
আরও কিছু ছিল তবু সুর, আরও কিছু গান
কিছু অভিমান আর অনুযোগ, তাও ছিল।
সব সুর বিষণ্ণ সংকেত ভেবে রাত্রিতে জড়িয়ে নেয় পৃথিবী।
বিষাদের অতলান্তে প্রসারিত হয় ক্রমে
রাত্রির দীর্ঘতা । সামনে এগুবো?
সবাই তো বলে শেষ বলে কিছু নেই ।
প্রশ্বাসে বয়ে বিষণ্ণ হাহাকার, সামনে পা বাড়াই।
নৈশব্দে পাশে দাঁড়ায় স্মৃতির কঙ্কাল।
অস্তরাগে- অস্তাচলে, নীল নীল বিষাদে।

বিষণ্ণ সনেট



কত প্রাণ কত গান কত কথা সব
অলস বিকেল গুলো ছড়ায়ে বিষাদ
স্ফীত হয় সহসা দহনেরই স্বাদ
ভুলে ভরা যাতনার ব্যর্থ কলরব।
গোধূলি জড়িয়ে কিছু ম্লান অনুভব
আঁধার ঘনিয়ে কালো আকাশের ছাদ
রাত্রির আবহে ভ্রমময় অনুনাদ
স্মৃতির খেয়ায় আজ সব কুশীলব।

কথা সব শুধু আজ ভ্রান্ত অভিমান
ছন্দেরা যায় ভেসে দূরে দূরে নীরবে
মৌন অন্ধকারে তুমি আজো বাধো গান।
আঁধারে হারাই আমি, প্রাণহীন ভবে
স্বপ্নরা ঘুম যায়, নিঃশব্দ কলতান
আর কি পড়বে মনে থাকব না যবে!

কবির মৃত্যু

দীপান্বিতা,
জানোই তো শব্দেরা লীন হলে কবিতার মৃত্যু হয়।
কবিতার মৃত্যু হলে কবিও নিথর।
আর পরদিন ভোর বেলা প্রেমিকেরও ।
পান্ডুলিপির অনেকটা পাতা খালি রেখেই
ছন্দের যবনিকা। অথচ, এক বুক প্রাণ ছিল কবিতায়।
আশ্রয়হীন শব্দাবলী কবিতার শরীর থেকে
ছিন্ন ভিন্ন হয়ে টুকরো লাশের মত বিভ
স।

প্রেম কভু এঁকেছিল বালুচরে নকশা।
কয়েকটি সজীব কবিতায়, সময়ের খেয়ালী অবসরে।
আকাশ তার সমস্ত নীল ব্যথার বিষে ঢেলে
আজ অন্ধকারের অনন্ত গ্রন্থিতে নিমজ্জিত।
দমকা হাওয়া ঝাপ্টা দিয়ে ঘুম ভাঙালো স্বপ্নবাজের।
কখনো কিছু প্রেম, কিছু অনুভূতি প্রতীক্ষিত থাকে
দীর্ণ হবার, ঝড়ের আচমকা প্রলয়ে।
কবির ও স্বাদ জেগেছিল প্রেমিক হবার।


কবির মৃত্যু হলে, প্রেমিকেরও পাঠ চুকে যায় জীবনের।
পরদিন ভোরে পরে থাকে শূন্য পান্ডুলিপি,
দীপান্বিতা, অধিকারের উরুসন্ধি সপে দাও
নিত্যকার রাত্রির কামিত উষ্ণতায়, পরাভূত শরীরে
নিতান্ত্য শারীরিক আয়োজনে।
কবিকে খুঁজবে পরে, ভোর হলে, সকালের পুণ্য স্নানে।
অনুভবে ছিল যার শিহরণ, কবিতার অক্ষরে প্রেম।
শুন্য সব শব্দরা তোমাকেও একা করবে কবিহীন প্রহরে।
পরদিন ভোর, অনুরাগের অষ্ট প্রহর নয়,
কবি আর প্রেমিকের জন্য শোকসভার প্রস্তুতি চলবে।