চৈত্রের শেষ প্রহরে
ঘামে ভেজা পাঞ্জাবীটার পকেটে
কুঁচকানো নরম একটি চিঠি
সময়ের ধুলো আর হেলায় পরেছিল
নিঝুম অন্ধকারের নির্জন আঙিনায়।
আজ অনেক দিন পর
চৈত্রের শেষ প্রহরে সেই চিঠি পকেটে।
না, খোলা হয়নি সেই চিঠি।
তোমার বিদায়ের আনুষ্ঠানিক বার্তার
আর কি বা প্রয়োজন বল।
এর চেয়ে ঢের ভালো
চিঠিটা পকেটে রেখে তোমার স্মৃতি
জরিয়ে থাকা। জানি হয়তো
বেশ হায়াহীন আমি, তাই তো
নির্লজ্জের মতো তোমার ধিক্কারকেও
স্মৃতি করে উড়াই আজো রোমন্থনের
নাল নীল হলুদ ফানুস।
বৈশাখ তো এসেই গেলো আবার।
কবিতাও তাই মগজের ধাক্কায়
কলম ফুড়ে বেরিয়ে আসবে
কাগজে, হয়তো তোমার হেলা নিয়েই
রচিত হবে বৈশাখী দাহময় কাব্য।
প্রকৃতি দহনের সুখ নেই,
আমিও দগ্ধ সুখ পাই তোমার
নির্লিপ্ত চিঠির অক্ষরে অক্ষরে।
বৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডব যেন
দুমড়ে দেয় প্রাণ, প্রেমহীন সে।
বয়ে চলে আজো বিষাদের
চোরা স্রোতে। পুড়ে পুড়ে হয়
অঙ্গার, তোমার সহাস্য পরিহাসে।
বৈশাখে আমি কবি হই,
তুমি হও পীযূষ দহনে তৃপ্ত
বনলতা, সেতো কেবল কবিতায়।
বৈশাখ তো কাব্য নয়,
উৎসবের মুখরিত প্রেমপ্রহর স্রেফ।
তাইতো আমায় লেখা তোমার
চিঠি সব উষ্ণ প্রেম নয়,
বৈশাখী দাবদাহে ক্রুদ্ধ তিরস্কার।
আমিও তবু জরিয়ে থাকি
সেই স্মৃতি- অপরিবর্তিত সত্তায়
হৃদয়ে মেখে নিয়ে অমোঘ সান্তনা-
কবিদের এমনি হয়,
বৈশাখ শুধুই কাব্যময়।
থাকনা জরিয়ে অগোছালো জীবনের
কিছু কিছু প্রস্থান, কয়েকটি পরাজয়।
আর মুঠো মুঠো হেলা,
বৈশাখ তো আছেই, কবিতাও আছে সজীব।
প্রতীক্ষিত থাক বরষায়
ভেঝা সিক্ত কদমফুল।
No comments:
Post a Comment