Wednesday, October 29, 2014

মেহের চত্বর



মেহের চত্বর- ক্লাস ফাঁকি দেয়া অলসতা ভরা সকাল
মেহের চত্বর- গুমোট দুপুর, স্নিগ্ধ শান্ত বিকাল।
মেহের চত্বর- দৃপ্ত শ্লোগান, গনসঙ্গীত ঝংকার
মেহের চত্তর- উদ্ভ্রান্ত সেই একুশের অহংকার ।

মেহের চত্বর- অভিমানী গান, বিরহ জড়ানো সুর
মহের চত্বর- মান ভাঙানোর চেষ্টা এক দুপুর,
মেহের চত্বর- এক কাপ চা, সিগারেট হাতে জ্বলত
মেহের চত্বর- হৃদয় শুধু তোমারই কথা বলতো।  

মেহের চত্বর- গোধূলি বেলায় আড্ডা মুখোর প্রহর
মেহের চত্বর- প্রকৃতির ভীরে দূরে রেখে সব শহর,
মেহের চত্বর- হাতে রেখে হাত প্রেমের কবিতা বলা
মেহের চত্বর- দ্রোহের কাব্যে প্রতিবাদী সুর তোলা।

মেহের চত্বর- মুখরিত র‍্যালি, অনাবিল সব উচ্ছ্বাস
মেহের চত্বর- ভুলবোঝাবুঝি অনুযোগ, দীর্ঘশ্বাস।
মেহের চত্বর-স্মৃতি জড়ানো হৃদয়ের ফ্রেমে অমলিন
মেহের চত্বর- প্রতিবাদহীন সময়ের স্রোতে বিলীন।

Monday, October 27, 2014

প্রতারিত বোধের অবসানে



বিপন্ন বোধে অবলুপ্ত মানবিকতা আজ সহসাই
নিয়ন আলোর আধুনিকতায় মহোসবে মত্ত
উচু দালানের সুসজ্জিত লালনীল আলোয় উদাত্ত
কবিতার বইতো সেকেলে সংস্কৃতি, দামী মুঠোফোন
মাঝরাতে বিজাতীয় সংস্কৃতির নির্লজ্জ উযাপন
আঘাতে বঞ্চনায় বিবর্ণ মূল্যবোধ, হাসে লালসাই।

আমাদের হৃদয়ের প্রতিটি আঙিনা হেথায়  
লালসার  লিকলিকে কালো জিভের দংশনে
ক্ষতবিক্ষত। প্রেম তাই লীন হয় আত্মগপনে
দেশত্ববোধ এখানে উপহাসে আলোচিত
বিপ্লবীর রুদ্র সত্ত্বা এখানে অসার- মৃত
সাম্যের  অভীপ্সা নিরবে কেঁদে যায়।

পথভ্রষ্ট সময়ের অবসানে শুভ সূচনা হবে নব প্রভাতের?
অসহায়ের ক্রন্দন স্বর মুহূর্তেই  হবে মুক্তির উদাত্ত শ্লোগান
পোশাকে নয়, চেতনায় ধারিত হবে সংস্ক্রিতর মান
সাম্য কেবল কবিতার বদ্ধ অক্ষরে নয়, উদ্ভাসিত হবে  
রক্তিম আভা হয়ে সমাজের প্রচ্ছদে, প্রতিটি হৃদয়ের অনুভবে।
নতুন দিনের সূর্য উঠবে বিদায়ে আঁধার রাতের?


Wednesday, October 22, 2014

প্রতারিত বোধে

অসীম অভিশাপের নীল বিষের জলাঙ্গি বসুধা আজ
স্বার্থবাদের ঝাঁঝালো গরল ঢেলে দেয় হেলায়
মূল্যবোধের প্রতিনিয়ত বিলুপ্তি, মুমূর্ষু চেতনায়
সহসা ভূপতিত হয় মানবতা, ধ্বংসের প্রকাণ্ড তাণ্ডবে
অবলুপ্ত সভ্যতা ছেয়ে যায় শ্বাপদসংকুল  খাণ্ডবে।
বিপ্লবীর দেহে নিমেষেই যেন শবদেহের সাজ।

এখানে আজ কবিতা নয়, বাহবা পায় লেজুড়বৃত্তির বুলি
এখানে আজ কবিরা নিষ্পেষিত হয় পুলিশি বুটের তলায়
শৃঙ্খলিত হয় কবিতার অক্ষর আপনার স্বাধীন চলায়।
সুউচ্চ অট্টালিকার কক্ষে কক্ষে বাকময় নারিদেহে কুর্দন নৃত্যে
নিষিদ্ধ লালসায় খেলে যায় সব শোষকের দল কলুচিত চিত্তে।
শুভ্রতা নয় তাই রক্তের ধারা এঁকে যায় সব শিল্পীর তুলি।

প্রতারিত হয় মুক্তির আর্তি, ক্ষমতাবানের ভ্রান্তির ছলে,
মানবতার কফিনে শেষ পেরেক গাঁথে পুঁজিবাদের নিষ্ঠুর হাত
নিঃসাড় ম্রিয়মাণ সত্ত্বার ব্যর্থ অন্বেষণে মুক্তির রাঙ্গা প্রভাত।
কবিতাকে বিবস্ত্র করে ফ্যাশনের জিঙ্গেল গড়ে বিচ্যুত আধুনিকতা
নির্লজ্জ ধর্ষকামী চরিত্র নিমেষেই বনে যায় শিল্পের ত্রাতা।
দ্রোহের শব্দাবলী হতাশায় ভিড় করে নির্বাক কথাদের দলে।  

Thursday, October 16, 2014

দ্রোহের অনুযোগ(কোনো এক ব্লগের এডমিনকে)

কাব্য সাধক সব সুধীজন
চিত্ত মম আহত ভীষণ
কাব্য যে হায় নিষিদ্ধ হয়
কবি চেতনায় আজ যে প্রলয়।
আলোচনাতে কাব্য এলো
খুব কি তাহাতে ধর্ম গেলো!
দ্রোহের কাব্য হোকনা সে আজ
ব্যঙ্গ সুরে মুক্তির আওয়াজ।
তবে কেন হলো কাব্য বিলীন
কবির কলম আজ পরাধীন?
প্রশাসক তুমি কাব্য সভার  
জয় হোক তব কামনা আমার।
অনুযোগ তুলি তব পানে হায়
কাব্য না থাকিলে  কবি অসহায়।
একটি কাব্য একদিনে তাই
দ্রোহের শব্দ কোথায় সাজাই।
আলোচনাতেই দিলাম কাব্য
দ্রোহের শব্দে সবাই ভাববো।
নিষিদ্ধ হলো কাব্য আমার
“ইহা যে নয় আলোচনার”
প্রতিবাদী শত লেখনীগুলো
নিষিদ্ধতায় প্রাণ হারালো।
অনুযোগ রাখি প্রশাসক পানে
কাব্য বাঁচুক ছন্দ- তানে
আপন আলোর উদ্ভাসে তাই
কাব্যে বাজুক দ্রোহের সানাই।

স্বাধীন প্রাণে দ্রোহের ছন্দে
কাব্য যে পাক তৃপ্তি
দ্রোহই আমার তরুণ প্রানে
অরুণ আলোকদীপ্তি।

Tuesday, October 14, 2014

বিচ্যুত সময়ের বিভ্রান্তিতে



বিচ্যুত সময়ের বিভ্রান্তিতে পথভ্রষ্ট হই বারবার
কবেকার কোন অতীতের গৌরবময় অনুভূতি
সময়ের বিপরীতে দাড়িয়ে অঙ্গার- অসার।
মৌন বিকেলের অন্তিমে গোধূলির আবছায়া মায়ায়
সজীবতায় আর উদ্বেলিত নই, আসন্ন রাতের
বিকটতায় ভয়ার্ত থাকি, মূর্ছে যাই প্রতিনিয়ত।

নিরবধি নদীর মতো বয়ে চলে সময়
স্বার্থপরতায় বিভোর হয়ে, কখনোবা প্রচলিত নিয়মের
নির্লজ্জ দাসত্বে।ক্লান্ত অনুভূতি বিবর্ণ হয় বর্তমানের
ধেয়ে আসা নিষ্ঠুর ঝড়ে। নিরুপায় দুমড়ে যাই,
ভেবেছিলাম অন্তর্ধানেই মিলবে মুক্তি। অথচ
আজ বোধ করি মুক্তি কেবল সয়ে যাওয়া নিষ্পেষণেই।

অবোধ লাম্পপোস্ট, কেবল আলো বিলিয়ে দীর্ঘ করে
শবছায়া- সুবিধাবাদী রাত্রি বাহবা নেয় ভয়াল
অন্ধকারের দুর্ভেদ্য গাউন জড়িয়ে, আড়ালে রেখে
নিপীড়িতের শোক, ক্রন্দনস্বর।কবিতাবলি লাঞ্ছিত হয়
অসাম্যের বিদ্রুপে। ঠাই পায় অসার জড় জঞ্জালরূপে
দম্ভজড়ানো স্টাইলিস্ট আসবাবের কোনায় কোনায়।

নিমেষে কবিতাকে দেয়া হয় বেআইনির গ্লানি
প্রেম হয়ে যায় অচ্ছুত লজ্জা, নারী হয় বারবনিতা,
বিপ্লবীর তাজা রক্তে ক্রমশ স্নানরত কুণ্ঠিত সমাজ।
সুধাংশুরা আজ হয়তো পালায়না আর
মুখ বুজে মেনে নেয় অদৃষ্টের পরিহাস, সান্ত্বনা
পায় কবিদের নিষিদ্ধ কবিতার নীরব প্রতিবাদে।