Thursday, October 29, 2015

তুমিও হারবে একদিন



কন্ঠ তো অনেক আগেই স্তব্ধ হয়েছে, বাকি আছে সুপ্ত বোধটুকু
অব্যক্ত হলেও সযত্নে লালিত ওটা নাইবা তোমার অধিকারে গেল,
অতটুকু আমারি থাকবলার ক্ষমতা হারিয়েছি জানি
ভাবার ক্ষমতাটা থাকুক জানিতো আদর্শররা সবসময়
স্লোগান হতে পারে না, কিছু কিছু থেকে যায় অব্যক্ত কবিতা হয়ে
কবির বোধে, অনুভবে

স্বপ্ন কেড়েছ অনুযোগ নেই, শৃঙ্খলে রুদ্ধ করেছো প্রতিটি প্রহর ।
ততটুকুও সময়ের ব্যবধানে সয়ে গেছে। মৌনতা টুকু আমার থাক।
স্বাধীনতাকে জানি স্পর্ধাই বলা চলে, ভিক্ষা হিসেবেই দাও।
মুক্তি নাইবা মিলল, নৈঃশব্দ্যের আলিঙ্গনে নিথর থাকবো ঢের।
জেনে রেখো বোধের অনুরণন জাগরণেরই পূর্বাভাস।
উত্তেজনার চরমে স্খলিত বীর্যের পর নির্মোহতা আসেই।
অথচ তোমার শোষণ ক্লান্তিহীন। আমার দহনও তাই অনির্বাণ। 

প্রতীক্ষায় থাকুক আদর্শের উত্তর প্রজন্ম,
আমার রুদ্ধস্বর শ্লোগান হয়ে ধ্বনিত হবে আগামীর শব্দতরঙ্গে।
নিঃশেষ মেনে নিই আজকের পরাজয়,
প্রাপ্তির ভাড়ার শূন্য থাকুক, আমি কেবল বোধ নিয়েই বাঁচি।
আগামীর আগমনে প্রাপ্তির থলেটা জমিয়ে রাখতে হবে যে!
তুমিও হারবে একদিন।

Tuesday, October 27, 2015

অপরাজিতা



অপরাজিতা,  সহস্র বসন্তের পরে অমোঘ নিয়তি তবু বরণ করি বিচ্ছেদের
শূন্য অসার চিত্তের নীরবতায় বসন্তের দুর্বোধ্য ব্যাথার নৈঃশব্দ্য গর্জন।
সময় কভু সাক্ষ্য দেবে আজকের, পাছে ভালোবাসা তো মেয়াদোত্তীর্ণ-
স্মৃতির বসন্তেই সজীব হয়ে হিসেব কষবে বর্তমানের লালিত বিচ্ছেদের।  
ব্যস্ত দুপুরের চঞ্চল আমেজে চায়ের পেয়ালায় বিষ্ণু দে, কিংবা অবসাদে
স্বপ্নময় রুদ্র গোস্বামী সুনীলের কথা রাখেনির দলে ভিড় করল ধীরে।
সময়ের বিক্ষিপ্ত দোলায় অপরাজিতা আর বরুণারা মিলে মিশে একাকার।
তবু তোমায় নিয়ে লিখে যাই অপরাজিতা। ফুলদানীতে সেদিনের রক্তজবা  
নির্জলা সময়ের স্বার্থপরতায় বিবর্ণ। কবিতার বইগুলো ধুলো জড়ানো-
বুকে নিয়ে জমানো কিছু প্রেমের শব্দ, দ্রোহের শব্দ, সৃজনের স্বপ্নতান।
অপরাজিতা, বসন্ত তো আজো আসে সবুজের সমারোহে, কবিতায় তবু
বসন্ত নেই। বসন্তরা তোমারি মত স্মৃতি হয়ে থাক বিচ্ছেদের কবিতায়।

নিথর মনের স্বাক্ষর




কেবলই স্মৃতির প্রচ্ছদে জমা
নিথর মনের স্বাক্ষর,
পাছে গাঢ় কিছু শূন্যতা-
খাবার দোকানীর কাগজের মোড়কে
কবিতার জড় অক্ষর,
নাই বা পেল পূর্ণতা।

সীমার ওপাশে বহে
দুর্নিবার বেদনার ঢল,
নষ্ট হাহাকার বৃত্তান্ত!
স্মৃতি গুলো সব
আবেগ তাড়িত ছল
পরাজিত নিতান্ত।


সময়ের সাথে দ্বৈরথে

সময়ের কাছে পরাভূত বাস্তবতা
পরিচয়হীন আশ্রয় খোঁজে কান্নার সরু রেখায়,
ঠিক আশ্রয় নয়, একে সান্ত্বনাই বলা যায়।
তাই পাথুরে সময়ের নিষ্ঠুর আঘাতে  
কবিতা রক্তাক্ত হয়, কবি মূর্ছা যায় বিষাদে।
সহস্র শতাব্দীর জমানো শক্তির শেকল
আবদ্ধ করে মুক্তির কণ্ঠস্বর। প্রতিবাদের ব্যর্থ দম্ভে
আদর্শগত চেতনায় জড়তা তাই।
উদ্বেলিত সকাল আজ সাক্ষ্য দেয় শূন্যতার।
উদ্যম তো স্রেফ দ্রাক্ষা পেয়ালা হয়ে
খুনি বেদনার হাতে সমর্পিত ।
আমাদের কবিতার অক্ষরে অক্ষরে বিজ বুনবে নৈরাশ্য।
শব্দহীন পরিপাশ আঁকড়ে ধরবে আমাদের সুরেলা সময়।
মুক্তির গান তাই আর্তনাদ।
নৈশব্দে কাঁদে নির্জন অরণ্যে ।
প্রতিদানে কান্নার নিঃশব্দ প্রতিধ্বনি অনিমেষ অবিরাম।
দূর সাগরের বুক থেকে ভেসে জাহাজির আগমনী সুর।
জানি ওঁত পেতে আছে সেই
শত সহস্র হিংস্র পিশাচ,
সময়ের মদদে ওরা  তাণ্ডবে মত্ত হবে ধ্বংসের।
তবু মোরা আবার সুরের বাঁধনে বাঁধতে চাই গান,
শব্দের মালায় কবিতার ছন্দ তান।
জানি বৈশাখের রুদ্র দহন চেতনায় ঠাই নেবে
আর সময়ের বিপরীতে সাজাবো রনাঙ্গন।
ভ্রম নয়, বাস্তবেই মেতে উঠবে কবিতা যুদ্ধের ছন্দে।
হয়ত বর্তমানের ওপাশে প্রতীক্ষারত
আজ বিজয়, নয়ত ভ্রান্তির কুহকে আবার
পরাজিত সৈনিক হয়ে অন্তিম নিমজ্জন।
তবু কবিতার বুকে কবি গড়ে যায় জীবনের স্পন্দন,
সময়ের সাথে দ্বৈরথে অবিচল।